ইন্টারনেটে টাকা আয়ের জন্য অনেক উপায় আছে, তার মধ্যে অউটসোর্সিং ছাড়া অন্য সব ক্লিক জাতীয় কাজের মধ্যে গুগল এ্যাডসেন্স সবচেয়ে ভাল । আজ আমরা দেখব কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করা যায়।

গুগল এ্যাডসেন্স কি?
ইন্টারনেটে হাজার হাজার ওয়েবসাইট আছে  কিন্তু যে সকল ওয়েবসাইটের ভিসিটর নেই  সে সকল ওয়েবসাইটের কোনো মুল্য নেই করণ কোনো সাইটের মূল লক্ষ্য হলো ভিসিটর কে কোনো বিষয় সম্পর্কে তথ্য দেওয়া,  তাই ভিসিটর না থাকলে  সব তথ্যের  কোনো মূল্য নেই। তাই  ওয়েবসাইটে ভিসিটর আনতে হলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও করতে  হয় কিন্তু এসইও  একটি দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া প্রায় ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগে | তাই এসইও করা ছাড়া অথবা এসইও করা ওয়েবসাইট   তাৎক্ষনিক  ভিসিটর পাওয়ার  জন্য  গুগল  বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করে | অর্থাৎ কোনো ওয়েবসাইটের লিঙ্ক অন্য ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়  | যেমন নিচের ছবিতে তাকালে বুঝা যায়।

যখন প্রথম ওয়েবসাইটের কোনো ভিসিটর দ্বিতীয় ওয়েবসাইটির লিঙ্ক দেখতে পায় তখন ওই লিঙ্কে ক্লিক করে তার কাঙ্খিত  তথ্যের জন্য দ্বিতীয় ওয়েবসাইটে  গমন করে এভাবে দ্বিতীয় ওয়েবসাইট গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহার এর মধামে ভিসিটর পায় |

অপর দিকে এভাবে কোনো ওয়েবসাইটে ভিসিটর পাবার জন্য  ওয়েবসাইটির মালিক কে গুগল কে টাকা দিতে হয় | অন্য দিক এ গুগল যাদের ওয়েবসাইটে এ এই বিজ্ঞাপন বসায় তাদের কে টাকা দেয়| উভয় পক্ষকে লাভ দিয়ে গুগল নিজে কিছু কমিশন রাখে | এই প্রক্রিয়া টি হলো গুগল এ্যাডসেন্স।

গুগল এ্যাডসেন্স কিভাবে করবেন?
এ্যাডসেন্স থেকে আয় করার জন্য আপনাক গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট করতে হবে | এই একাউন্ট  করার জন্য নিদৃষ্ট কিছু তথ্য দিয়ে এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হয় | গুগলে ১০ দিন  অথবা এর কম সময়ের মধ্যে আপনার ইমেলএ একটি  ইমেল পাঠাবে যে আপনার একাউন্ট অনুমোদিত হয়েছে | প্রথমিক ভাবে একাউন্ট অনুমোদিত হলে গুগল নিচের ছবি র মত একটি ইমেল পাঠাবে |

এই ইমেল পাবার পর আপনি আপনার এ্যাডসেন্স একাউন্ট এ লগিন করলে গুগল আপনাকে যে জাভাস্ক্রিপ্ট কোড দিবে সেটা আপনার ওয়েবসাইটের নিদৃষ্ট স্থানে বসিয়ে দিন| কিছুক্ষণ এর  মধ্যেই ঐ স্থানে গুগলের এ্যাডগুলো দেখা হবে | সাবধান নিজের ওয়েবসাইটের এ্যাডে কখনো ক্লিক করবেন না | নিজের ওয়েবসাইটের এ্যাডে ক্লিক করলে গুগল ওই একাউন্টটি বন্ধ করে দেয়| এমনকি অন্য কোনো কম্পিউটার থেকেও ক্লিক করবেন না কারণ গুগল Natural and Spam ক্লিক এর মধ্যে পার্থ্যক বুঝতে পারে|

এ্যাডসেন্স  থেকে আয় আর জন্য আপনার প্রথম যা লাগবে তা হলো আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট অথবা  ব্লগ | আমার কাছে অনেকে  আসে যে, আমার তো ব্লগ আছে  কিন্তু এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করে এ্যাডসেন্স পাই নাই | তাই আমি নতুনদের কথা বিবেচনা করে এ্যাডসেন্স পাওয়ার উপায়গুলো ধাপে ধাপে আলোচনা করছি| আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটি হতে হবে একটা নিদৃষ্ট বিষয়-র উপর যেমন: আমি আমার নতুন  একটা ওয়েবসাইটের জন্য  কাজ করছি যার মূল Keyword হলো Food recipes এবং এই ওয়েবসাইটের সকল আর্টিকেল ফুড রেসিপি সংক্রান্ত | সুতরাং  এ্যাডসেন্স  পাবার জন্য আপনাকে একটি নিদৃষ্ট বিষয়র উপর ওয়েবসাইট  থাকতে হবে |
যে   বিষয়টির উপর ওয়েবসাইট  তৈরি করবেন যেমন Food recipe সংক্রান্ত ওয়েবসাইট হলে নাম দিতে পারেন www.foodrecipes.com অথবা www.foodrecipes24 .com | সাধারনত ফ্রী ব্লগিং এর মাধ্যমে এ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন  করলে গুগল এগুলোকে কম মূল্যায়ন করে | তাই সহজে এ্যাডসেন্স  পাবার জন্য টপ লেভেল ডোমেইন (.com .org  ... ) নির্বাচন করুন |
আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন মোটামুটি প্রফেসনাল হওয়া উচিত এ ক্ষেত্রে আমার সাজেশন  হলো  ফ্রী ব্লগিং টেম্পলেট  ব্যবহার করা| গুগল কোনো ওয়েবসাইট এ্যাডসেন্স দেওয়ার আগে এই বিষয় গুলো কে খেয়াল করে |
আপনার ওয়েবসাইটির অবজেক্ট সম্পর্কিত লোগো থাকা উচিত | কারণ এটা ইন্টারনেট এ আপনার কোম্পানি বা ওয়েবসাইট সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা প্রকাশ করে এবং এর  মাধ্যমে ওয়েবসাইটির যে প্রফেসনাল তা প্রকাশ পায় | তাই আমার সাজেশন হলো এ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করার আগে সুন্দর একটি লোগো ব্যবহার করুন|

আপনার সাইটকে indexing  করা অর্থাৎ গুগল  এর ডেটাবেইজ লিপিবদ্ধ করা , এ্যাডসেন্স  এর জন্য আবেদন করার আগে আপনার ওয়েবসাইটকে গুগলে Indexing করা উচিত | আর দ্রুত Indixing করার জন্য আপনি গুগল ওয়েবমাস্টার টুল সাইট ভেরিফাই করে নিন এসময় আপনার ওয়েবসাইটের এক্সএমএল সাইটম্যাপটি যোগ করে দিন| এই প্রক্রিয়ায় ২৪ ঘন্টার ভেতর আপনার ওয়েবসাইট গুগল  Indixing হয়ে যাবে | এসইওর জন্যও সাইটম্যাপ একটি গুরত্বপূর্ণ ব্যাপার ইউটিউবে কিভাবে সাইটম্যাপ তৈরী করতে হয় এবং ওয়েবমাস্টার টুল দিয়ে ভেরিফাই করতে হয় তা সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো ভিডিও আছে| 

গুগল আসলে ভিসিটর খোজে যদি আপনার সাইটে ভালো ভিসিটর থাকে ,তাহলে আপনার এ্যাডসেন্স পাওয়া কোনো কঠিন কাজ  না | তাই চেষ্টা  করুন প্রতিদিন কিছু ইউনিক ভিসিটর রাখার, এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন যদি কিছু স্যোসাল বুকমার্কিং করেন তাহলে ভালো ভিসিটর পাবেন |
আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট হতে হবে ইউনিক, ৪০০ শব্দের ৫  থেকে ১০ টি অথবা যত বেশি পারা যায় কন্টেন্ট রাখুন | আর একটি কথা আর্টিকল কেমন হবে বা কোন বিষয় আর্টিকল এ থাকতে পারবে না তা জানার জন্য এ্যাডসেন্সের Terms And Condition ভালো ভাবে পরে নিন |

এসইওতে বলা হয়ে থাকে " কনটেন্ট   ইজ  কিং " তাই আপনার আর্টিকেলগুলু ১০০% ইউনিক হলে এসইওর জন্য ভালো আর মনে রাখবেন ডুব্লিকেট  আর্টিকলে ব্যবহার  করলে গুগল ওয়েবসাইট  ব্যান  করে দিবে। আর্টিকল কেমন হবে বা কোন বিষয় আর্টিকল এ থাকতে পারবে না তা জানার জন্যও গুগলের Terms And Condition গুলো ভালো ভাবে পরে নিন |
আপনার প্রতিটি পেজের জন্য On page SEO  ঠিক  করে নিন | আপনার প্রত্যেক  পেজের র জন্য পেজের সাথে সামঞ্জস পূর্ণ টাইটেল  দিন | আকর্ষণীয় মেটা ডেসক্রিপশন  ব্যবহার  করুন |
উপরোক্ত বিষয় গুলো মেন করে খুব সহজেই আপনি একটি  এ্যাডসেন্স একাউন্টের মালিক হতে পারেন। এ্যাডসেন্স থেকে আয়  করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে ভালো ভাবে এসইও  করতে হবে অর্তাত আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশী  ভিসিটর আসবে তত বেশী ক্লিক পরার সম্ভাবনা থাকবে তত বেশী  আয় হবে।


লেখক - ইয়াসিনূল হায়দার রূপক 

2 টি মন্তব্য

  1. Unknown  

    আমার সাইটটিতে গুগল এ্যাডসেন্স আছে কিন্তু ভিজিটর খুব কম ভিজিটর বাড়ানো জন্য কি করা জানাবেন কি ?

  2. আরিফুল ইসলাম  

    এডসেন্স থেকে ভালো আয়ের জন্যে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক, কেননা উপযুক্ত কিওয়ার্ড বাছাই, কন্টেন্টে কিওয়ার্ড প্রয়োগ ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় জড়িত থাকে। :)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন